প্রেমের সম্মেলন-শৈলেন্দ্রনাথ সরকার || গল্প || অকপট অনুসন্ধান

0

প্রেমের সম্মেলন-শৈলেন্দ্রনাথ সরকার

সে আজ থেকে প্রায় এক বছরের আগেকার ঘটনা।সে সময়টা ছিলো সদ্য বি.এ পাশ করে এম.এ তে,তখন ২য় সেমিষ্টার।সবাই যেমন স্টাডি নিয়ে জীবন স্রোতের সমুদ্রে গা ভাসিয়ে দেয় ঠিক তেমনি বিকাশ আর তাপসের জীবনও যেন তা থেকে ব্যতিক্রম নয়।

তাপস জানে যে বিকাশ এক স্পষ্ট স্বভাবের বক্তা।প্রেম সম্পর্কে আগের মুহূর্ত পর্যন্ত যেমন তার গাম্ভীর্যতা,পাষন, হৃদয়হীন কঠোরতা, কিন্তু যখন সে নীতার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে তখনই তার এই গাম্ভীর্যতা, পাষানহীনতা,কঠোরতা যেন সরলতা,মুগ্ধতা আর কঠোর আত্মবিশ্বাসে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।  

বিকাশ প্রতিদিনের মতো এদিনও স্টাডি শেষ করে কিছুক্ষন নিরবমনে স্টাডি গুলি স্মৃতিচালনা করছিল, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করেই তার একটি ফোন আসে।সে হ্যালো বলার পর অপর প্রান্ত থেকে শুনতে পায় একটি মিষ্টি ভয়েস।এরপর বিকাশ যেন ইচ্ছা কৃতভাবেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং নীতা সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্বীকারও করে।

বিকাশ এই কথা গুলো তাপস কে জানানোর জন্য মনে মনে প্রায় অনেকদিন ধরেই ভাবে আসছিল।একদিন সময় মতো পেয়ে হঠাৎ বিকাশ তাপস কে প্রশ্ন করলো।

তাপস তোর কাছে আমার একটি প্রশ্ন ছিলো?

সে সময় তাপস শেলীর লেখা একটি রোম্যান্টিক গল্প মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলো।তাই সে একটু অমনোযোগী হয়ে বলল, হ্যাঁ কি যেন বলছিস?

আচ্ছা তোর কাছে ‘প্রেম’ মানে কী?

ও এই প্রশ্ন? তাহলে শোন।আমার কাছে প্রেম মানেই হচ্ছে ‘টাকা’।‘টাকা’ দিলেই সব ধরনের প্রেম পাওয়া যায়।

বিকাশ আশ্চর্য হয়ে বলল, তুই ভুল বলছিস।সম্পূর্ন ভুল ভেবেছিস।তোর কাছে তাহলে প্রেম সম্পর্কে সঠিক কোন ধারনাই নেই।বিকাশ ভেবেছিলো তাপস তাকে অনেক বিশ্বাস দেবে, কিন্তু না।তবে প্রথম দিকে বিকাশের এই রকম ধারনাই ছিলো।যখন থেকে তার জীবনে নীতার প্রবেশ, তখন থেকেই নীতার ভালোবাসা তাকে বুঝিয়ে দেয় নিঃস্বার্থ প্রেমের বিশ্বাস

তাপস মনোযোগী হয়ে বিকাশ কে বলল, আচ্ছা তুই বল প্রেমের অর্থ কী?

আমার কাছে প্রথমত প্রেম মানে বিশ্বাস।আমার কাছে প্রেম মানে মনে যার ছবি আঁকতে চাইনা, কিন্তু মনটা যেন ঠিক তারই ছবি এঁকে রাখে।আমার কাছে প্রেম মানে যার কথা ভাবতে চাইনা, কিন্তু মনটা যেন তার কথায় অহরহ ভেবে চলে।

তাপস বিকাশের মতে সহমত দিয়ে বলে, হ্যাঁ বন্ধু তুই ঠিকই বলেছিস।এখন আমিও তোর মতে সহমত।

এদিকে বিকাশ ও নীতা ধীরে ধীরে দুজনে দুজনের প্রতি প্রবল আসক্ত হয়ে পরে।অতীত কে পিছনে ফেলে বর্তমান কে সঙ্গে নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। এগতে থাকে দুজনে দুজনের হাত ধরে ভবিষ্যতের দিকে।হটাৎ একদিন নীতা অসুস্থ হয়ে পরে।নীতা বিকাশ কে ফোন করে।বলে-

বিকাশ তুমি জানো আমার সারা শরীরে অজস্র ব্যথা।জানিনা আমার কি হয়েছে।আমি খুবই অসুস্থ।

কি হয়েছে নীতা?তোমার কি হয়েছে?আমি এখুনি আসছি।তোমার কিছুই হবেনা।তোমাকে ভালো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।

এদিকে বিকাশের সেকেন্ড সেমিষ্টারের ফাইনাল পরীক্ষা।নীতা তার প্রিয়জন ভালোবাসার মানুষ কে বলে ছিলো, তুমি কিছু ভেবনা। তুমি ভালো করে পরীক্ষা দাও, ভালো রেজাল্ট কর। দেখবে আমার রোগ একদম সেরে গেছে। আমার শরীর সুস্থ হয়ে যাবে।

কয়েক মাস পর, বিকাশ পরীক্ষায় ভালো ফল করল।সেই আনন্দে সে নীতা কে ফোন করলো ! কিন্তু ফোনের অপর প্রান্তে নীতাও আজ সেই সমাজের বেড়াজালে।

লেখকঃ শৈলেন্দ্রনাথ সরকার(কুশমন্ডি,দক্ষিন দিনাজপুর)


লেখা পাঠানোর নিয়মাবলী

আপনারা আপনাদের মূল্যবান লেখা নির্দ্বিধায় আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন। আমরা তা আমাদের অনলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশ করব।

  • ইমেল আইডি: contact.okopotanusandhan@gmail.com

  • লেখার ফরম্যাট: অভ্র ইউনিফাইড টাইপ কিপ্যাডে টাইপ করে লেখা পাঠাতে হবে।

  • ইমেলে যা উল্লেখ করবেন: আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং কোন ক্যাটাগরিতে লিখছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top