ছি ছি ছি বৌমা আবার তুমি এখানে এসেছো!তোমাকে এতবার করে মানা করলাম তারপরেও তুমি আমার কথা শুনলে না।আমি কতবার করে বললাম নিচে এসোনা বৌমা নিচে এসো না তার পরেও তুমি চলে আসলে হ্যাঁ।আমার বড় ছেলেটাকে তো খেয়ে নিয়েছো।এখন কি আমার ছোট ছেলেটাকেও খাবে নাকি!বারবার বারণ করলাম বিধবা মহিলাদের শুভ অনুষ্ঠানে আসতে নেই, বিধবা মহিলাদের শুভ কাজ করতে নেই,তারপরেও তুমি বুঝলে না এখন দিপুর হলুদ মাখা হবে আর তুমি এসে একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে আছো।ভয়ে ভয়ে সুজাতা বলে উঠল আমি এখানে আসতে চাইনি মা, দিপু আমাকে বারবার করে বললো বৌদি তোমাকে আসতেই তাই আমি আসলাম মা।সুজাতার কথা শেষ হতেই শান্তা দেবী চেঁচিয়ে উঠে বললেন কি কান্ড রে বাবা!আচ্ছা যদি কেউ বলে যে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় তা তুমি কি করবে শুনি! তা দিপু বললো আর অমনি তুমি মুখ উঠিয়ে নিচে চলে এলে।শাশুড়ির কাছে এত গালমন্দ খাবার পরেই সুজাতা কাঁদতে কাঁদতে তার ঘরে চলে গেল, ঘরের দরজা লাগিয়ে সে রাধামাধবের মূর্তির সামনে বসে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল ঠাকুর, আমার স্বামীকে তো নিয়ে নিয়েছো তার সাথে আমার সুখও নিয়ে নিয়েছো, তাহলে আমাকে নিলে না কেন ঠাকুর!কেন নিলেনা!তুমিতো ভালো করেই জানো যে আমি সেখানে যেতে চাইনি,ভাই আমাকে বারবার করে বললো সে জন্যই তো আমি গিয়েছিলাম।আমার খুব ভুল হয়ে গেছে, এই বলেই সুজাতা অঝোরে কাঁদতে লাগল।শাশুড়ির কাছে এত গালমন্দ খাবার পরেই সুজাতা কাঁদতে কাঁদতে তার ঘরে চলে গেল, ঘরের দরজা লাগিয়ে সে তার টেবিলে রাধামাধবের মূর্তির সামনে বসে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল ঠাকুর, আমার স্বামীকে তো নিয়ে নিয়েছো তার সাথে আমার সুখও নিয়ে নিয়েছো, তাহলে আমাকে নিলে না কেন ঠাকুর!কেন নিলেনা!তুমিতো ভালো করেই জানো ঠাকুর আমি সেখানে যেতে চাইনি,ভাই আমাকে বারবার করে বললো সে জন্যই তো আমি গিয়েছিলাম।আমার খুব ভুল হয়ে গেছে, এই বলেই সুজাতা অঝোরে কাঁদতে লাগল।কিছুক্ষণের মধ্যে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো।দিপু এসেই তার বৌদিকে খুঁজতে লাগলো কিন্তু, সে কোথাও বৌদিকে দেখতে পেল না।গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের মধ্যে সে আর কথা বাড়ালো না।অনুষ্ঠান শেষ হলেই সে দৌড়ে চলে গেল, বৌদির ঘরের সামনে গিয়ে বলতে লাগলো বৌদি লক্ষী বৌদি আমার দরজা খোলো, কি গো তুমি গেলে না কেন!তোমাকে এতবার করে আমি বললাম তাও তুমি গেলে না।আমার কি দোষ বৌদি একবার বলো!দরজাটা খোলো শোনো না বৌদি দরজাটা খোলো।কিন্তু সুজাতা আর কিছুতেই দিপুর কথা শুনল না সে রাধামাধবের মূর্তির সামনে ঠায় বসে রইলো।রাগে অভিমানে দিপু বলে উঠলো ও বুঝেছি বৌদি তুমি আমার অনুষ্ঠানে থাকবে না, সে কথা আগেই বলে দিতে পারতে,যে দিপু তোমার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমি থাকতে পারব না।তাহলে হয়তো এতটা কষ্ট হতো না বৌদি আমি এতটা দুঃখ পেতাম না।সময় বয়ে গেল গোধূলি লগ্নও এসে গেল,কিন্তু সুজাতা একভাবেই দরজা বন্ধ করে বসে রইল।বিয়ে করতে যাবার আগে দিপু তার বৌদির দরজার সামনে গিয়ে আবারও বললো বৌদি যাচ্ছি আমি জানি তুমি আর বেরোবে না ঘর থেকে,জানিনা তোমার কি হলো আমি যে কি ভুল করলাম!যাই হোক দরজার সামনে থেকেই তোমায় প্রণাম করে যাচ্ছি আমাকে আশীর্বাদ করো, যাতে শুভ অনুষ্ঠান ভালোভাবে সম্পূর্ন হয়।বিয়ে করতে যাবার আগে দিপু তার মাকে বলল মা বৌদি এরকম কেন করছে গো!বৌদির কি হয়েছে? তার মা বলে উঠলো-জানিনা কি হয়েছে তোর বৌদির,ও যত না আসে ততই ভালো।বিধবা কে শুভ কজে থাকতে নেই। তুই যা বাবা বউ নিয়ে আয়। দিপু মনে মনে বুঝতে পারল তার মা হয়তো বৌদিকে এমন কিছু বলেছে যার জন্য বউদি নিজেকে আটকে রেখেছে। সে সময় আর কথা না বাড়িয়ে দিপু বেরিয়ে গেল বিয়ে করতে।পরের দিন দিপু বউ নিয়ে বাড়ি এলো।বাড়িতে এসে চারিদিকে তাকিয়ে দেখল কিন্তু সে তার বৌদিকে কোথাও দেখতে পেলো না।বধূবরণ পর্ব শেষ হলে দিপু তার বউকে নিয়ে সোজা চলে গেল বৌদির ঘরের দিকে।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দিপু বললো বৌদি দরজা খোলো,কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো সাড়া এলো না। তাই দেখে দিপুর বউ প্রিয়া বলতে লাগলো বৌদি আমি এসেছি আমাকে দেখবে না দরজাটা খোলো একবার।দিপু প্রিয়াকে আগেই সবটা বলে রেখেছিল।প্রিয়া খুব জোরে জোরে বলতে লাগলো বৌদিভাই দরজাটা খোলো না। আচ্ছা তবে কি আমাকে তোমার পছন্দ হয়নি গো!এ কথা শুনে সুজাতা আর থাকতে পারলো না সঙ্গে সঙ্গেই দরজা খুলে দিয়ে বললো না না বোন তোমাকে আমার বেশ পচ্ছন্দ হয়েছে।দিপু আর প্রিয়া বৌদিকে প্রণাম করল সুজাতাও প্রান ভরে আশীর্বাদ করল। অন্যদিকে এই সবকিছু দেখে সুজাতার শাশুড়ি বলতে লাগলেন যত সব আদিখ্যেতা দেখলে বাঁচিনা বাপু।
লেখা পাঠানোর নিয়মাবলী
আপনারা আপনাদের মূল্যবান লেখা নির্দ্বিধায় আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন। আমরা তা আমাদের অনলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশ করব।
ইমেল আইডি: contact.okopotanusandhan@gmail.com
লেখার ফরম্যাট: অভ্র ইউনিফাইড টাইপ কিপ্যাডে টাইপ করে লেখা পাঠাতে হবে।
ইমেলে যা উল্লেখ করবেন: আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং কোন ক্যাটাগরিতে লিখছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না।


