বহু পুরনো ওই কৃষ্ণচূড়াটি –অনেক না বলা কথা অনেক না বলা ভাষা,গল্প, সুখ দুঃখের সাক্ষি ও।ওর ওই যে মগডালটি- ওখানে রোজ এসে বসত দুটো অচীনপুরের প্রাচীন পাখি।রোজ আসতো ওরা-রোজ।বহু দিনের বন্ধুত্ব ওদের।কিছুটা সময় নিজেদের মতো করে কাটাতো।সংসারের গল্প, ছানাপোনাদের কথা,নিজেদের ভালোলাগা, খারাপ লাগা, চোখের জল, ঠোঁটের হাসি- সব কিছুই ভাগ করে নিতো।এর মাঝেও আবার ঝগড়াঝাটি, ব্যাকুলতার আকুল আবেগ, রাগ-দুঃখ-অভিমান বাদ পড়তো না কিছুই।
সাক্ষি ওই কৃষ্ণচূড়াটি।চুপটি করে নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে শুনত ও।কিন্তু
বলবার ভাষা নেই ওর।জমিয়ে রেখেছে সব মনের কোনে।
রোজকার নিয়মেই চলে ওদের আনাগোনা।রোজকার সাক্ষ্যতা, রোজকার
ভালোলাগা।কিন্ত একদিন হঠাৎই এক দমকা হাওয়া-ঝটকা মেরে ভেঙ্গে পড়ল ডাল।আছড়ে পড়ল
দুজনেই।এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা।যন্ত্রনা শুধুই যন্ত্রনা।জাপটে ধরে যন্ত্রনার
ছটফটানি।আরো কিছু বলার আছে –আরো কিছু বলার আছে, একা ফেলে যেওনা।
কিন্তু নির্মম নিয়তি! সব বন্ধনের অবসান ঘটিয়ে চীর বিদায় জানালো।তার
প্রিয়জনকে।অনেক জমানো কথা না বলায় থেকে গেলো ওদের।
আজও সে রোজ আসে, একাকীত্ব কে সঙ্গী করে।কৃষ্ণচূড়ার ওই
ডালটিতে বসে থেকে কিছুক্ষন।পুরোনো স্মৃতি, পুরোনো কথা,পুরোনো হিসেব,
ভালোলাগা, মন্দলাগা, পুরোনো আবেগ,
অনুভূতি গুলোকে রোমন্থন করে।অশ্রুবেয়ে ঝরে পরে জল।অনেক
কিছু বলার ছিলো-অনেক কথা জমানো ছিলো ওদের।নীরবে একাকী বসে সে কথা বলে স্মৃতিগুলোর
সঙ্গে।চক্ষে তার অপেক্ষার চাহনি- মুখে তার বিষন্নতার সুর-“তুমি রবে নীরবে –হৃদয়ে
মম” তারপর হতাশায় বুখ বেঁধে উড়ে চলে যায় কোন দূর আকাশের গহন পানে।
জানে জানে ওই কৃষ্ণচূড়াটি সব জানে।সেই এই নির্মম পরিণতির একমাত্র
সাক্ষী।কিন্ত সে নিথর নীরব,ব্যক্ত করার
ক্ষমতা যে তার নেই, তাই বেদনাগুলো জমিয়ে রেখেছে তার মনের
কোনে।সেও বোঝে-এতো হবার ছিলো না।
লেখিকাঃ রুমা পাল (তপন ,দক্ষিন দিনাজপুর)
লেখা পাঠানোর নিয়মাবলী
আপনারা আপনাদের মূল্যবান লেখা নির্দ্বিধায় আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন। আমরা তা আমাদের অনলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশ করব।
ইমেল আইডি: contact.okopotanusandhan@gmail.com
লেখার ফরম্যাট: অভ্র ইউনিফাইড টাইপ কিপ্যাডে টাইপ করে লেখা পাঠাতে হবে।
ইমেলে যা উল্লেখ করবেন: আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং কোন ক্যাটাগরিতে লিখছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না।

