‘আমার মা……… এলার্ম বাজার সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে সংসারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন।আর এই ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতেন,আমরা সবাই যখন রাতে ঘুমিয়ে
পড়তাম তারপর।আমরা দুই বোন তুলিকা আর মল্লিকা।মায়ের আদুরে ডাক তুলি আর মৌলি।মা, প্রতিদিনের নিয়মে কখনো ক্লান্ত হয়ে পড়তেন না।তিনি বলতেন দিনের শেষে তোদের মুখ থেকে “মা” ডাকটাই আমার সব ক্লান্তি দূর করে শক্তি যোগায়।“মা” শব্দটা এতটাই শক্তিশালী পৃথিবীর সমস্ত সন্তানের মাতৃ মনের মধ্যে সুপ্ত স্নেহকে জাগিয়ে তুলে সুগন্ধের ন্যায় বিকশিত করে’।
আমি তখন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছি।কর্মব্যস্ত মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম-‘মা,আমরা দুই বোন আমাদের কোন ভাই নেই বলে,তোমার কষ্ট হয়না’।মা তখন ধমক দিয়ে বললেন-‘তোদের এই বিশ্বাসে বড়ো করেছি যে,একটি ছেলেকে যদি প্রকৃত মানুষ করা যায় তাহলে সে পর্বতের চূড়ায় গিয়ে ঝান্ডা পুঁতে দিয়ে আসতে পারে।একটি মেয়েকেও যদি একই নিয়মে বড়ো করা যায় সেও নিরাশ করে
না’।তিনি অবাক হয়ে বললেন-‘তাহলে কি আমার বিশ্বাসে কোথাও ফাঁক থেকে গেছে?’সামরিক রেগে গেলেও রাগ সংবরণ করে বললেন-‘অর্থ না থাকলে মানুষকে সমাজের চোখে মান-সম্মানহীন নিম্ন বলে গণ্য করা হয়।সেই ধনসম্পত্তি আগলে রাখতে মা লক্ষীকে দেবী জ্ঞানে পুজো করা হয়।সেই আসনে লক্ষ্মীর প্রতি নারায়ন দেবকে বসানো হয় না কেন? কেন বলা হয় রাধা না ভজিলে কৃষ্ণ পাওয়া যায় না? গোটা দেশব্যাপী ধুমধাম করে দেবী দূর্গারূপী নারীশক্তির আরাধনা করা হচ্ছে। পুরুষশক্তিশালী হলে নারীশক্তির সামনে মাথা নত কেন?’আমার কাছে মায়ের প্রশ্নের উত্তর ছিল না।তাই মায়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে একান্তে উত্তর খুঁজতে দোতালায় নিজের রুমে চলে গেলাম।হাতের কাজটা শেষ করে আমার রুমে এসে আমাকে অন্যমনস্কভাবে জনালা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মাতৃস্নেহে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন-‘মায়ের প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিস বুঝি?’ আমি বললাম-‘তোমার প্রশ্নটা সঠিক।আবার পাড়ার কাকিমা-জেঠিমারা বলে পুত্র সন্তান বংশের প্রদীপ তাহলে এই কথায় ভুল কোথায়?আমি বুঝতে পারছি না।কী উত্তর দেবো তোমার প্রশ্নের………’।আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন-‘সেই উত্তর খুঁজে দেওয়ার জন্যই কাজ ফেলে তোর পিছনে ছুটে এলাম রে’।খাটে বসে আমার মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে কপালে চুম্বন করে ম্লান হেসে বললেন-‘আমি ‘আগমনী আবাহন’ নামে নাটক দেখেছিলাম।সেখানে এক সাধারন রমণী থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প ছিল।অর্থাৎ নারীর ভেতরে শক্তি’।মায়ের মুখের মৃদু হাসি আমার জানার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল।আমি বললাম- ‘নারীর ভেতরে শক্তি মানে’।‘ঈশ্বরের অদ্ভুত সৃষ্টি নারী।যা হলো প্রকৃতি।পৃথিবীর জন্য আশা আর পাপীদের জন্য সতর্কবার্তা’।উচ্চ স্বরে বললেন-‘নারীর ভেতরে শক্তি যেটা কালের থেকেও বৃহৎ।কালের অর্থ হল অনন্ত অসীম, নিরাশার আশা আর অহংকারীদের বিনাশ।এমন কোন উত্তর নেই যে, নারীশক্তি খুঁজে বের করতে পারে না।ব্রহ্মান্ডে এমন কোনো প্রশ্ন নেই যার সামনে নারীশক্তি দাঁড়ায়নি।আরো একটা কথা সবসময় মনে রাখবি,পুরুষ যদি এক বংশের প্রদীপ হয় তাহলে নারী হলো দুই বংশের প্রদীপ’।আমি মায়ের কোল থেকে উঠে বসে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম-‘মা আমার মধ্যেও কি নারী শক্তি আছে?’মা আমার মুখের আদুরে হাত বুলিয়ে বললেন-‘অবশ্যই আছে কিন্তু প্রদীপ কখনো সূর্যকে পথ প্রদর্শন করে না।নিজের মধ্যে শক্তি রহস্য নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে’।মায়ের গলার স্বর গম্ভীর হয়ে গেল।‘যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায় তাকে স্বয়ং যাত্রা করতে হয়।অন্তর্দ্বন্দ্বের সহায্যেই পাওয়া যায় নতুন পথের দিশা’।আমি মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম।আমি করুন কন্ঠে বললাম-‘এটা সত্য না স্বপ্ন?’ তিনি করুন চাউনিতে উত্তর দিলেন-‘এই সত্য স্বপ্নের থেকেও বৃহৎ।যা সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে সত্যের সঙ্গে পরিচয় করায়’।আমি তর্কের স্বরে প্রশ্ন করলাম-‘মা,মধ্যবর্তী ঘরের মেয়েরা নারীশক্তির মতো কঠিন শব্দের অনুভব করবে কি করে?’ তিনি শান্ত হয়ে অনুভূতির সঙ্গে উত্তর দিলেন-‘গাছের সঙ্গে ফুলের সম্পর্ক জানার আগে যেমন গাছের সাথে শিকড়ের সম্পর্ক জানা প্রয়োজন।ঠিক তেমনি বর্তমানটা জানার আগে অতীতটা জানা দরকার।তবে বুঝতে পারবি,একটি মেয়ে যে পরিবারই বড়ো হোক না কেন সময়ের চাকা যখন জীবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।তখন নারীশক্তির মতো কঠিন শব্দ তার অনুভব করতে দেরি হয় না।সীমাহীন প্রকৃতি মহান নাকি সীমাবদ্ধ উন্নয়নকারী সমাজ বানান পুরুষ মহান?’ সুন্দরভাবে নিজের করা প্রশ্নের উত্তর দিলেন-‘অগ্নিশিখার তাপ যেমন অনুভবকারী বলে বোঝাতে পারে না।ঠিক এই রকম বহু প্রশ্ন আছে যা অনুভব ছাড়া বোঝানো যায় না’।মায়ের মুখে কঠিন কথাগুলো শুনতে শুনতে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম।বললাম –‘সত্য কি?’ তিনি জানালার প্রকৃতির দিকে অবাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললেন-‘সত্য হলো পরম।পরমার্থই হল সত্য। যে কাজের সাহায্যে নিজের কোন লক্ষ পূর্ণ হয় না, শুধু আনন্দ লাভ হয় তা হল পরম। যে কাজে কোন স্বার্থ থাকেনা সেটা হলো পরমার্থ।পুরুষাস্বার্থের মধ্যেও কিন্তু পুরুষের স্বার্থ লুকিয়ে থাকে’।বিছানা থেকে উঠে জানালার রেলিং ধরে বললেন-‘প্রকৃতি হল এক রীতি।যার মধ্যে কোন স্বার্থ থাকে না’।নারীকে সেই আসনে কেন বসানো হয় না? যে আসনে বসে থাকা পুরুষের উচ্চস্বরের কথা নারীকে মাথা নিচু করে শুনতে হয়’।মা আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন-‘গণ্ডিঘেরা মেয়েটির যখন নারীশক্তির জ্ঞান হয়।সে যখন বুঝতে পারে তারমধ্যে শতরূপা শক্তি আছে।তখন তার মধ্যে থাকা অহংকার ও অন্তরের অন্ধকারের মৃত্যু হয়ে নতুন জন্ম লাভ হয়।সে তখন সেই আসন বসে নিষ্ঠুর,পিশাচ,নারী অত্যাচারিত পুরুষদের শাস্তি দেয়।পর্বতের উচ্চতা যত বৃদ্ধি পেতে থাকে বনস্পতি তত হ্রস পেতে থাকে।সব শেষে একরাশ শান্তি। যেখানে থাকে নারীশক্তি রূপী একজন মায়ের মন।জীবনের কোন সমস্যাই বড়ো মনে করে ভয় পেলে হবে না।তার সম্মুখীন হয়ে মোকাবিলা করলে তা জীবনের পথে অনেক সোজা হয়’।কথা শেষ করে মা আমার হাতটা ধরে ছাদে নিয়ে গেলেন।আবার বলতে আরম্ভ করলেন-‘যে পুরুষ নারীকে পায়ের ধুলা মনে করে।সেই পুরুষকে ধুলিস্যাৎ করে দেওয়াই তো নারী শক্তির একমাত্র লক্ষ্য রে।শক্তি শুধু দেবী দুর্গা দেবী কালীর মধ্যে আছে তা নয় প্রত্যেক নারীর মধ্যে শক্তি নিহিত।যতদিন মেয়েরা নিজেকে অবলা মনে করে সমস্যা থেকে পালিয়ে বেড়াবে ততদিন ওই দস্যুরূপী পুরুষেরা তাদের বিনাশ করবে তাই না।নারী যখন নারীশক্তিকে কাজে লাগায় তখন স্বৈরাচারী শাসকদের মৃত্যু অবধারিত’।মায়ের কথা শুনে মনে হচ্ছিল আমার মধ্যের নারীশক্তিকে যদি আমি কাজে লাগাই তাহলে হয়তো আমিও ওই অবসাদগ্রস্ত মেয়েদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারবো।জীবনে মায়ের কথাগুলো ন্যায় হিসেবে তুলে ধরতে পারবো।তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দৃঢ়তার সাথে বললেন-‘একজন নারী থেকে পুরুষের জন্ম হয়।সেই পুরুষ যখন নারীর অস্তিত্ব মাটিতে মিশিয়ে দেয়।তখন সেই গ্লানি থেকে উৎপন্ন হওয়ার নারী ভয়ঙ্কর হয়’।আমি মায়ের মুখ থেকে ভয়ংকর শব্দটা শুনে মাকে জড়িয়ে ধরে ভিত স্বরে বললাম-‘উগ্র নারী শান্ত হয় কি করে?’ উনিও সমানভাবে আমাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে বললেন-‘উগ্র নারীকে সন্তানের “মা” ডাকই শান্ত করতে পারে।“মা” শব্দটা শুনে নিজের মনকে প্রসারিত করে।নারী-পুরুষের ভেদাভেদ না করে সন্তানের মতন গোটা বিশ্বকে জড়িয়ে ধরে।চোখের জলে উগ্ররূপ ভাসিয়ে দেয়’।আমার মায়ের দুই চোখ জলে ভরে গেল।আমি জল মুছিয়ে দিয়ে বললাম-‘মা, অবশ্যই তোমার স্বপ্ন পূরণ করবো।আমি নিশ্চিতভাবে অধিকারহীন মেয়েদের সাহায্য করব।তাদের ভিতর নিহিত নারীশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে পারে’। ‘তোদের বাবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ‘নারীশক্তি’ রহস্য খুঁজে না পেলে তোদের বাবার প্রশ্নের উত্তর দাও কি করে?’এই বলে আবার আমার কপালে চুম্বন করে মাথাটা জরিয়ে ধরলেন। বাসের ঝাঁকুনি তুলির কথা শেষ করে দিল।তার মায়ের সেই দিনের অনুপ্রাণিত মূলক ভাষা তাকে আজও ভাবতে সাহায্য করে।অত্যাচারীদের সামনে লাঠি হয়ে দাঁড়াতে সহযোগিতা কআলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন-‘সেই উত্তর খুঁজে দেওয়ার জন্যই কাজ ফেলে তোর পিছনে ছুটে এলাম রে’।খাটে বসে আমার মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে কপালে চুম্বন করে ম্লান হেসে বললেন-‘আমি ‘আগমনী আবাহন’ নামে নাটক দেখেছিলাম।সেখানে এক সাধারন রমণী থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প ছিল।অর্থাৎ নারীর ভেতরে শক্তি’।মায়ের মুখের মৃদু হাসি আমার জানার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল।আমি বললাম- ‘নারীর ভেতরে শক্তি মানে’।‘ঈশ্বরের অদ্ভুত সৃষ্টি নারী।যা হলো প্রকৃতি।পৃথিবীর জন্য আশা আর পাপীদের জন্য সতর্কবার্তা’।উচ্চ স্বরে বললেন-‘নারীর ভেতরে শক্তি যেটা কালের থেকেও বৃহৎ।কালের অর্থ হল অনন্ত অসীম, নিরাশার আশা আর অহংকারীদের বিনাশ।এমন কোন উত্তর নেই যে, নারীশক্তি খুঁজে বের করতে পারে না।ব্রহ্মান্ডে এমন কোনো প্রশ্ন নেই যার সামনে নারীশক্তি দাঁড়ায়নি।আরো একটা কথা সবসময় মনে রাখবি,পুরুষ যদি এক বংশের প্রদীপ হয় তাহলে নারী হলো দুই বংশের প্রদীপ’।আমি মায়ের কোল থেকে উঠে বসে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম-‘মা আমার মধ্যেও কি নারী শক্তি আছে?’মা আমার মুখের আদুরে হাত বুলিয়ে বললেন-‘অবশ্যই আছে কিন্তু প্রদীপ কখনো সূর্যকে পথ প্রদর্শন করে না।নিজের মধ্যে শক্তি রহস্য নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে’।মায়ের গলার স্বর গম্ভীর হয়ে গেল।‘যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায় তাকে স্বয়ং যাত্রা করতে হয়।অন্তর্দ্বন্দ্বের সহায্যেই পাওয়া যায় নতুন পথের দিশা’।আমি মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম।আমি করুন কন্ঠে বললাম-‘এটা সত্য না স্বপ্ন?’ তিনি করুন চাউনিতে উত্তর দিলেন-‘এই সত্য স্বপ্নের থেকেও বৃহৎ।যা সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে সত্যের সঙ্গে পরিচয় করায়’।আমি তর্কের স্বরে প্রশ্ন করলাম-‘মা,মধ্যবর্তী ঘরের মেয়েরা নারীশক্তির মতো কঠিন শব্দের অনুভব করবে কি করে?’ তিনি শান্ত হয়ে অনুভূতির সঙ্গে উত্তর দিলেন-‘গাছের সঙ্গে ফুলের সম্পর্ক জানার আগে যেমন গাছের সাথে শিকড়ের সম্পর্ক জানা প্রয়োজন।ঠিক তেমনি বর্তমানটা জানার আগে অতীতটা জানা দরকার।তবে বুঝতে পারবি,একটি মেয়ে যে পরিবারই বড়ো হোক না কেন সময়ের চাকা যখন জীবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।তখন নারীশক্তির মতো কঠিন শব্দ তার অনুভব করতে দেরি হয় না।সীমাহীন প্রকৃতি মহান নাকি সীমাবদ্ধ উন্নয়নকারী সমাজ বানান পুরুষ মহান?’ সুন্দরভাবে নিজের করা প্রশ্নের উত্তর দিলেন-‘অগ্নিশিখার তাপ যেমন অনুভবকারী বলে বোঝাতে পারে না।ঠিক এই রকম বহু প্রশ্ন আছে যা অনুভব ছাড়া বোঝানো যায় না’।মায়ের মুখে কঠিন কথাগুলো শুনতে শুনতে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম।বললাম –‘সত্য কি?’ তিনি জানালার প্রকৃতির দিকে অবাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললেন-‘সত্য হলো পরম।পরমার্থই হল সত্য। যে কাজের সাহায্যে নিজের কোন লক্ষ পূর্ণ হয় না, শুধু আনন্দ লাভ হয় তা হল পরম। যে কাজে কোন স্বার্থ থাকেনা সেটা হলো পরমার্থ।পুরুষাস্বার্থের মধ্যেও কিন্তু পুরুষের স্বার্থ লুকিয়ে থাকে’।বিছানা থেকে উঠে জানালার রেলিং ধরে বললেন-‘প্রকৃতি হল এক রীতি।যার মধ্যে কোন স্বার্থ থাকে না’।নারীকে সেই আসনে কেন বসানো হয় না? যে আসনে বসে থাকা পুরুষের উচ্চস্বরের কথা নারীকে মাথা নিচু করে শুনতে হয়’।মা আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন-‘গণ্ডিঘেরা মেয়েটির যখন নারীশক্তির জ্ঞান হয়।সে যখন বুঝতে পারে তারমধ্যে শতরূপা শক্তি আছে।তখন তার মধ্যে থাকা অহংকার ও অন্তরের অন্ধকারের মৃত্যু হয়ে নতুন জন্ম লাভ হয়।সে তখন সেই আসন বসে নিষ্ঠুর,পিশাচ,নারী অত্যাচারিত পুরুষদের শাস্তি দেয়।পর্বতের উচ্চতা যত বৃদ্ধি পেতে থাকে বনস্পতি তত হ্রস পেতে থাকে।সব শেষে একরাশ শান্তি। যেখানে থাকে নারীশক্তি রূপী একজন মায়ের মন।জীবনের কোন সমস্যাই বড়ো মনে করে ভয় পেলে হবে না।তার সম্মুখীন হয়ে মোকাবিলা করলে তা জীবনের পথে অনেক সোজা হয়’।কথা শেষ করে মা আমার হাতটা ধরে ছাদে নিয়ে গেলেন।আবার বলতে আরম্ভ করলেন-‘যে পুরুষ নারীকে পায়ের ধুলা মনে করে।সেই পুরুষকে ধুলিস্যাৎ করে দেওয়াই তো নারী শক্তির একমাত্র লক্ষ্য রে।শক্তি শুধু দেবী দুর্গা দেবী কালীর মধ্যে আছে তা নয় প্রত্যেক নারীর মধ্যে শক্তি নিহিত।যতদিন মেয়েরা নিজেকে অবলা মনে করে সমস্যা থেকে পালিয়ে বেড়াবে ততদিন ওই দস্যুরূপী পুরুষেরা তাদের বিনাশ করবে তাই না।নারী যখন নারীশক্তিকে কাজে লাগায় তখন স্বৈরাচারী শাসকদের মৃত্যু অবধারিত’।মায়ের কথা শুনে মনে হচ্ছিল আমার মধ্যের নারীশক্তিকে যদি আমি কাজে লাগাই তাহলে হয়তো আমিও ওই অবসাদগ্রস্ত মেয়েদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারবো।জীবনে মায়ের কথাগুলো ন্যায় হিসেবে তুলে ধরতে পারবো।তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দৃঢ়তার সাথে বললেন-‘একজন নারী থেকে পুরুষের জন্ম হয়।সেই পুরুষ যখন নারীর অস্তিত্ব মাটিতে মিশিয়ে দেয়।তখন সেই গ্লানি থেকে উৎপন্ন হওয়ার নারী ভয়ঙ্কর হয়’।আমি মায়ের মুখ থেকে ভয়ংকর শব্দটা শুনে মাকে জড়িয়ে ধরে ভিত স্বরে বললাম-‘উগ্র নারী শান্ত হয় কি করে?’ উনিও সমানভাবে আমাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে বললেন-‘উগ্র নারীকে সন্তানের “মা” ডাকই শান্ত করতে পারে।“মা” শব্দটা শুনে নিজের মনকে প্রসারিত করে।নারী-পুরুষের ভেদাভেদ না করে সন্তানের মতন গোটা বিশ্বকে জড়িয়ে ধরে।চোখের জলে উগ্ররূপ ভাসিয়ে দেয়’।আমার মায়ের দুই চোখ জলে ভরে গেল।আমি জল মুছিয়ে দিয়ে বললাম-‘মা, অবশ্যই তোমার স্বপ্ন পূরণ করবো।আমি নিশ্চিতভাবে অধিকারহীন মেয়েদের সাহায্য করব।তাদের ভিতর নিহিত নারীশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে পারে’। ‘তোদের বাবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ‘নারীশক্তি’ রহস্য খুঁজে না পেলে তোদের বাবার প্রশ্নের উত্তর দাও কি করে?’এই বলে আবার আমার কপালে চুম্বন করে মাথাটা জরিয়ে ধরলেন। বাসের ঝাঁকুনি তুলির কথা শেষ করে দিল।তার মায়ের সেই দিনের অনুপ্রাণিত মূলক ভাষা তাকে আজও ভাবতে সাহায্য করে।অত্যাচারীদের সামনে লাঠি হয়ে দাঁড়াতে সহযোগিতা করে।সবাই এতক্ষণ তুলির কথা মন দিয়ে শুনছিল।‘আগমনী আবহান’ নাটকটা সত্যিই মেয়েরুপী নারীশক্তিকে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।নির্দিষ্ট জায়গা আসতেই সবাই নেমে পড়ল।তুলির কথাগুলো সদস্যাদের মনে কোথাও গিয়ে দাগ কেটে দিয়েছিল।যে যার মত বাড়ি ফিরে গেল ………।। রে।সবাই এতক্ষণ তুলির কথা মন দিয়ে শুনছিল।‘আগমনী আবহান’ নাটকটা সত্যিই মেয়েরুপী নারীশক্তিকে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।নির্দিষ্ট জায়গা আসতেই সবাই নেমে পড়ল।তুলির কথাগুলো সদস্যাদের মনে কোথাও গিয়ে দাগ কেটে দিয়েছিল।যে যার মত বাড়ি ফিরে গেল ………।।
লেখা পাঠানোর নিয়মাবলী
আপনারা আপনাদের মূল্যবান লেখা নির্দ্বিধায় আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন। আমরা তা আমাদের অনলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশ করব।
ইমেল আইডি: contact.okopotanusandhan@gmail.com
লেখার ফরম্যাট: অভ্র ইউনিফাইড টাইপ কিপ্যাডে টাইপ করে লেখা পাঠাতে হবে।
ইমেলে যা উল্লেখ করবেন: আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং কোন ক্যাটাগরিতে লিখছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না।


